পারমাণবিক বোতাম নিয়ে পাল্টা হুঁশিয়ারী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

0
1546

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার কিম জং-উনকে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার নেতার চেয়ে ‘অনেক বড় এবং আরো শক্তিশালী’ পারমাণবিক বোতাম যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে। খবর এএফপি’র।

তিনি এক টুইটার বার্তায় বলেন, ‘উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন কেবলমাত্র বলেছেন যে ‘পারমাণবিক বোতাম সবসময়ই তার টেবিলে রাখা আছে। অনুগ্রহ করে তার দারিদ্র্যপীড়িত সরকারের কেউ তাকে জানাক যে আমারও একটি পারমাণবিক বোতাম রয়েছে যা তার চেয়ে অনেক বড় এবং আরো শক্তিশালী। আর আমার বোতামটি সক্রিয়।’

এর আগে উত্তর কোরিয়ার নেতা নববর্ষ উপলক্ষে দেয়া ভাষণে হুঁশিয়ার করে বলেছিলেন, তার টেবিলেই ‘পারমাণবিক বোতাম’ রয়েছে। তার এমন হুঁশিয়ারির পর ট্রাম্প এ বার্তা দিলেন। তবে নববর্ষের ভাষণে উন আগামী মাসে অনুষ্ঠেয় পিয়ংচং গেমসে অংশ নেয়ার এবং সংলাপে বসার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন যা ছিল ইতিবাচক।

দক্ষিণ কোরিয়া মঙ্গলবার উত্তর কোরীয় নেতার এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ইতিবাচক সাড়া দিয়ে আগামী ৯ জানুয়ারি পিয়ংইয়ংয়ের সাথে উচ্চ পর্যায়ে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছে।

তবে জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন দূত নিকি হ্যালি দুই কোরিয়ার মধ্যে সংলাপের প্রস্তাব নাকচ করে একে সাময়িক সমাধান হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, ওয়াশিংটন পিয়ংইয়ংয়ের পারমাণবিক অস্ত্র কখনো মেনে নেবে না।

পারমাণু বোমার বোতাম আমার ডেস্কেই থাকে : কিমের হুমকি
বিবিসি ও এএফপি
একই সাথে হুমকি আর শান্তির বার্তা দিয়ে নতুন বছর শুরু করেছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন। যুক্তরাষ্ট্রকে তিনি হুঁশিয়ার করেছেন, বলেছেন পারমাণবিক অস্ত্র ছোড়ার একটি বোতাম সব সময় তার ডেস্কে থাকে। আবার দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশ্যে কিম বলেছেন, আলোচনায় বসতে তিনি সব সময়ই প্রস্তুত। তাছাড়া আগামী ৯ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠেয় শীতকালীন অলিম্পিকে তার দেশ অংশ নিতে পারে বলে তিনি আভাস দিয়েছেন।

নববর্ষ উপলক্ষে উত্তর কোরিয়ার টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভাষণে কিমের এই বার্তা আসে। ভাষণে কিম বলেন, পুরো যুক্তরাষ্ট্রই উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের পাল্লার মধ্যে রয়েছে; আর এটি সত্যি, ফালতু হুমকি নয়। আর দক্ষিণের সাথে সমস্যা মিটিয়ে ফেলার আগ্রহ বোঝাতে কিম বলেছেন, তার দেশ হয়ত সিউলে আসন্ন উইন্টার অলিম্পিকে একটা দলও পাঠাতে পারে।

পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র কার্যক্রম এবং আন্তঃমহাদেশীয় বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কারণে উত্তর কোরিয়াকে সদ্যবিদায়ী বছরে কঠোর নিষেধাজ্ঞার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। নতুন বছরেও সেই নিষেধাজ্ঞার আওতায় চলতে হবে দেশটিকে। কূটনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন দেশটি এ পর্যন্ত ছয়টি পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে এবং পরমাণু শক্তি বাড়াতে কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।

নভেম্বর মাসে হোয়াসং-১৫ নামের আন্তঃমহাদেশীয় বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে পিয়ংইয়ং। ক্ষেপণাস্ত্রটি ভূমি থেকে আকাশে চার হাজার ৪৭৫ কিলোমিটার উঁচুতে পৌঁছায়, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে এই উচ্চতা ১০ গুণ বেশি। এই ক্ষেপণাস্ত্রের উৎক্ষেপণের পর উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে এ যাবৎকালের সবচেয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদ। এর মাধ্যমে দেশটিতে ৯০ শতাংশ পেট্রোলিয়ামজাতীয় পণ্য রফতানি বন্ধের লক্ষ্য রয়েছে। তবে উত্তর কোরিয়া জানিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞায় যারা ভোট দিয়েছে, তাদের শাস্তি দেয়া হবে। এবার নতুন বছর উপলক্ষে কিম জং-উন বললেন, পরমাণু অস্ত্র নিক্ষেপের বোতাম সব সময় তার ডেস্কে রাখা আছে। তার এই হুমকি কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিতে পারে।

মন্তব্য করুন