লামায় ৩৩ টি মৎস ক্রীক নির্মাণে উন্নয়নের নামে হরিলুট

0
1398

মৎস্য অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন বান্দরবানের লামায় ৩৩টি মৎস্য ক্রীক কোন কাজে আসছে না। এতে করে সরকারের পাহাড়ে মৎস্য উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে তার সম্পূর্ণ মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে জানান স্থানীয় জনসাধারণ ও প্রকল্পের সুবিধাভোগীরা।

লামা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, ‘পার্বত্য অঞ্চলে মৎস্যচাষ উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় লামা উপজেলায় ৭টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় তিন পর্যায়ে মোট ৩৩টি ক্রীক নিমার্ণ করা হয়েছে। মৎস্য অধিদপ্তর প্রত্যেকটি ক্রীক নির্মাণে গড়ে চার থেকে আট লাখ টাকা ব্যয় করেছিল। পার্বত্য এলাকায় মাছের চাহিদা পূরণ ও বেকারত্ব দূরীকরণের লক্ষ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছিল। বাঁধ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম, তদারকির অভাব এবং প্রকল্পে সুফলভোগীদের সম্পৃক্ত না করায় এই বেহালদশা বলে জানিয়েছেন ৩৩টি প্রকল্পের সুফলভোগীরা।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অধিকাংশ ক্রীক অবহেলায় ও অযত্নে নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া মৎস্য ক্রীক গুলো এলাকার প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যাক্তিদের নামে বাস্তবায়ন দেখানো হয়েছে। কাগজে পত্রে প্রত্যেক প্রকল্পে ১০ থেকে ১৫ জন সুফলভোগী দেখানো হলেও বাস্তবে কাউকে প্রকল্পে সম্পৃক্ত করা হয়নি। অভিযোগ উঠেছে, ক্রীক প্রদানে ও নিমার্ণে ব্যাপক অনিয়ম ও কালো টাকার লেনদেন হয়েছে।

এতে করে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ হয়নি। চরম অব্যবস্থাপনায় কোটি টাকার প্রকল্প হতে কোন সুবিধা পায়নি স্থানীয় জনগোষ্ঠী। ২০১৬ সালে সকল ক্রীক প্রকল্পের কাজ অফিসের কাগজে কলমে শেষ হলেও বাস্তবতা তার বিপরীত।

অনেক প্রকল্পে কাজ না করেও ক্রীক নির্মাণের টাকা আত্মসাৎ করেছে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় তদারকি কর্মকর্তা ও দায়িতপ্রাপ্ত প্রকৌশলী কিছু প্রকল্পে একবারও আসেননি এবং প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবে করেননি।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে গজালিয়া ইউনিয়নের রিপন মৎস্য বাঁধের কয়েকজন সুফলভোগী বলেন, আমরা শুনেছি আমাদের নাম প্রকল্পে রয়েছে। কিন্তু প্রকল্পের মূল মালিক রিপন বা মৎস্য অফিস আমাদের কখনও বিষয়টি জানায়নি এবং প্রকল্পে সম্পৃক্ত করেনি। বর্তমানে প্রকল্পটি অকেজো পড়ে আছে।

পার্বত্য অঞ্চলে মৎস্যচাষ উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের পরিচালক আব্দুল রহমান বলেন, আমি গত সপ্তাহে লামা পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। মৎস্যচাষীদের উদ্বুদ্ধ করে ক্রীক গুলো পুণরায় চালু করতে লামা মৎস্য অফিসকে বলা হয়েছে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রাশেদ পারভেজ বলেন, আমি সম্প্রতি লামায় এসেছি। অধিকাংশ ক্রীকের কাজ আমার যোগদানের আগেই হয়েছে। কয়েকটি ক্রীক নতুন করে চালু করার প্রস্তুতি চলছে।

মন্তব্য করুন