হালুয়াঘাট পৌর নির্বাচনঃ বিদ্রোহী প্রার্থীর ফাঁদে বড় দুই দল, সুযোগের সন্ধানে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা

0
859

ওমর ফারুক সুমন, হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) থেকেঃ আগামী ২৯ শে মার্চ আসন্ন হালুয়াঘাট প্রথম পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে প্রচার-প্রচারনা জমে উঠছে। তবে প্রথম পৌর নির্বাচনে বড় দু’দলেই বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় বিদ্রোহী পার্থীর ফাঁদে রয়েছে বড় দুই দল আওয়ামীলীগ ও বিএনপি। এই সুযোগকে কাটিয়ে সুবিধা নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। বিদ্রোহী কাটিয়ে যে এগিয়ে যেতে পারবে সেই বিজয়ী হবে বলে ভোটারগন জানান।

২০১৪ সালের ২০ জানুয়ারি হালুয়াঘাট পৌরসভার যাত্রা শুরু হলেও নানা জটিলতার কারণে বার বার নির্বাচন বাধাগ্রস্থ্য হয়েছে। চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারী নির্বাচন কমিশন হালুয়াঘাট পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। সেই থেকে পৌরবাসীর মধ্যে নির্বাচনী আলোচনার বাতাস পুরো দমে বইতে শুরু করে।

আগামী ২৯ মার্চ পৌর নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ১৪ হাজার ৪ শ’ ২৭ জন। পুরুষ ভোটার ৭ হাজার ২ শ’ ২৭ ও মহিলা ভোটার ৭ হাজার ২শ’ জন। প্রথম বারের মত এ পৌর নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ থেকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম-সম্পাদক খাইরুল আলম ভূঞা। তবে এ দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক মোঃ আব্দুল মোতালেব ও উপজেলা আওয়ালীগের সদস্য প্রশান্ত কুমার সাহা। বিএনপি থেকে ধানের শীষ প্রতীকে মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হামিদ। কিন্তু এ দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নাদিম আহমদ।

এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সদ্য সাবেক সদর ইউপি চেয়ারম্যান সালেহ আহাম্মদ। আসন্ন নির্বাচন নিয়ে কথা বললে আওয়ামীলীগের প্রার্থী সাবেক ছাত্রনেতা খায়রুল আলম ভুইয়া বলেন, হালুয়াঘাট পৌরসভা বাস্তবায়নে প্রয়াত সমাজ কল্যান প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট প্রমোদ মানকিনের নির্দেশনায় আমার শ্রম, মেধা. ঘাম ঝরানো কর্মকান্ড এবং বর্তমানে হালুয়াঘাট পৌরসভার উন্নয়নে মনোনীত কাউন্সিলর হিসাবে দিনরাত পরিশ্রমের ফসল হিসাবে বিজয়ী হতে পারলে পৌরবাসীর জনগনের জন্যে কাজ করে যাবো। তাদের পাশে থাকবো।

বি.এন.পির প্রার্থী সাবেক পৌর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আ: হামিদ বলেন, জনগন আমার একমাত্র সহায় গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৯ ভোটে পরাজিত হওয়ার কারনে ভোটাররা আমার প্রতি সহানুভূতিশীল, বেশ কয়েকটি নির্বাচনে আমি নি:স্ব হয়ে পড়েছি। দল এবং জনগন আমার পাশে থাকবে এবং ইনশাল্লাহ বিজয় সুনিশ্চিত। অপর দিকে পৌর এলাকা হালুয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সালেহ আহাম্মেদ। তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত জনগনের সেবা করছি, আচার বিচার, আপদ বিপদ, জন্ম মৃত্যু, এলাকার উন্নয়ন সকল কাজে মানুষের পাশে অবিচল। আমি কারো ক্ষতি করিনা, থানার দালালী করিনা, মামলা মোকদ্দমা বিচার আচারের মাধ্যমে সমাধান করে থাকি। আমি মানুষের ১৫বছরের পরিক্ষিত সেবক, তাই হালুয়াঘাটে পৌরসভার সকলের বিস্বস্থ নগরপিতা হিসাবে জনগন আমাকেই বিজয়ী করবে।

এ পৌরসভার মোট নয়টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে পুরুষ ৪৬ জন ও সংরক্ষিত মহিলা আসনে ১০ জন মহিলা প্রার্থী হয়েছেন। আগামী ২৯ মার্চ ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী উপজেলা হালুয়াঘাট পৌরসভায় অনুষ্ঠিতব্য প্রথম নির্বাচনকে ঘিরে পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে প্রার্থীদের গণসংযোগ ও প্রচার-প্রচারনায় মুখরিত মাঠ-ঘাট। অভিজ্ঞ মহলের মতে হালুয়াঘাট পৌরসভার নির্বাচনে কে হবেন নগর পিতা বা পৌর চেয়ারম্যান তা সময়ই বলে দেবে তবে বড় দুই দলে একাধীক প্রার্থী থাকায় দুই দলের মধ্যে বিজয়ী হওয়া অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ।

অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদের মতে, এক্ষেত্রে লাভবান হতে পারে সতন্ত্র প্রার্থীগন সে কারনে বড় দুই দলের সতর্ক থাকতে হবে। পৌর এলাকার ভোটারদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, আমরা চাই একজন যোগ্য প্রার্থী, সৎ মানুষ, কর্মঠ, ভাল মানুষ যার মাধ্যমে এলাকার সার্বিক উন্নয়ন হবে । মানুষের কল্যান হবে। মাদক ও নেশা মুক্ত যুব সমাজ গঠিত হবে। সন্ত্রাস মুক্ত, আধুনিক হালুয়াঘাট পৌরসভা গঠন হবে। পরিচ্ছন্ন বাজার, ড্রেনেজ ব্যবস্থা সহ মানুষের আস্থার কেন্দ্র বিন্দু হউক, আমাদের নগর পিতা এমন প্রত্যাশায় নির্বাচনের আশায় দিন গুনছে হালুয়াঘাট পৌরবাসী।

মন্তব্য করুন